▶ ভূমিকা: — জীবনের সুস্থ বিকাশের জন্য সুস্থ পরিবেশ একান্ত প্রয়োজনীয়। মানুষের চারপাশের পরিবেশকে সামাজিক পরিবেশ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ—এই দুটি ভাগে ভাগ করা যায়।
▶ মানুষের জীবনে সামাজিক পরিবেশের ভূমিকা:— মানুষের জীবন গড়ে তোলায় সামাজিক পরিবেশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক পরিবেশ যথাযথ না হলে মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে। এর ফলে বেড়ে যায় অপরাধমূলক কাজকর্ম, আত্মহত্যা ইত্যাদি ঘটনা। সুস্থ সামাজিক পরিবেশ তৈরিতে প্রধান ভূমিকা শিশুর পরিবারের, তারপরে এই ভূমিকা নিতে পারে তার বিদ্যালয়। রাষ্ট্র-প্রশাসন-রাজনৈতিক দলগুলিরও এক্ষেত্রে ভূমিকা আছে।
▶ প্রাকৃতিক পরিবেশ ও মানবজীবন:— সুস্থ প্রাকৃতিক পরিবেশ ছাড়া মানুষের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। অথচ বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও নগর-সভ্যতার বিকাশের ফলে প্রকৃতি আজ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এই সমস্যার তিনটি ক্ষেত্র হল—জলদূষণ, বায়ুদূষণ এবং শব্দদূষণ।
▶ জলদূষণ:— প্রাচীন সভ্যতা এবং শিল্পসভ্যতারও বিকাশ হয়েছিল নদীতীরবর্তী এলাকায়। কলকারখানার বর্জ্য পদার্থ, পয়ঃপ্রণালীর অভাবে গ্রামের যাবতীয় বর্জ্য পদার্থ নদীতে মিশছে। ফলে নদীর জল দূষিত হচ্ছে। ভারতের গঙ্গা, চিনের ইয়াংসি ইত্যাদি বড়ো বড়ো সব নদীই আজ দূষণের শিকার।
▶ বায়ুদূষণ:— অরণ্য-প্রকৃতিকে ধ্বংস করে গড়ে ওঠা নগরসভ্যতা বায়ুদূষণকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। কলকারখানা ও গাড়ি থেকে বেরোনো ধোঁয়া বাতাসে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। এই ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং’-এর ফলে মেরুপ্রদেশের বরফ গলে যাচ্ছে। এর সঙ্গে পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলির একাধিক বিস্ফোরণ বাতাসে পারমাণবিক তেজস্ক্রিয়তা সৃষ্টি করছে। ফলে ক্যানসার, পঙ্গুত্ব ইত্যাদি অসুখ তীব্রভাবে বেড়ে যাচ্ছে।
▶ শব্দদূষণ:— মূলত শহরাঞ্চলে গাড়ির হর্নের তীব্র শব্দ, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাজির শব্দ, মিছিলের শব্দ, মাইকের যথেচ্ছ ব্যবহার ইত্যাদি শব্দদূষণের সৃষ্টি করে। শব্দদূষণের ভয়াবহতা একদিকে যেমন মানুষদের মধ্যে স্থায়ী বধিরতার সৃষ্টি করতে পারে, অন্যদিকে হার্টের ও স্নায়ুর নানারকম সমস্যা সৃষ্টি করে।
▶ পরিবেশদূষণের প্রতিকার:— পরিবেশদূষণের বিরুদ্ধে প্রয়োজন একসাথে লড়াই। সংবাদমাধ্যমগুলির সাহায্যে দূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে হবে। বৃক্ষরোপণ ইত্যাদি কাজে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন-সহ সমস্ত স্তরের সাধারণ মানুষকে, বিশেষত ছাত্রছাত্রীদের এগিয়ে আসতে হবে। রাষ্ট্রীয় প্রশাসনকে মনে রাখতে হবে গ্রাম-শহরের সুষম বিকাশের কথা।
▶ উপসংহার:— সমগ্র মানবসমাজকে রক্ষার জন্য পরিবেশদূষণ প্রতিরোধ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় । ৫ জুন তারিখটি বিশ্বপরিবেশ দিবস হিসেবে পালিত হয়। কিন্তু শুধু একটি দিন নয়; বছরের প্রতিটা দিন পরিবেশ বিষয়ে মানুষকে সচেতন থাকতে হবে। তবেই পরিবেশদূষণের হাত থেকে মানবজাতির রক্ষা সম্ভব।
╍╍╍╍╍╍╍╍╍╍ 🌸 ╍╍╍╍╍╍╍╍╍
অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যাবহার করা একজন নবীন ছাত্র-ছাত্রি বা তাদের পিতা-মাতার কাছে কিছুটা কঠিন মনে হতে পারে। যাইহোক, এটি মোটেই নয় কারণ আপনি উপরে উল্লিখিত ধাপে ধাপে লেখা উত্তরগুলি অনুসরণ করে এটি সমাধান করতে পারেন। যদি আপনি আপনার সমস্যা থেকে সমাধান না পেয়ে থাকেন তাহলে আমাদের অবশ্যই জানাবেন।