আমাদের প্রিয় নবম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা,
প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের জন্য নির্ধারিত পাঠ্যসূচিকে ভিত্তি করে নবম শ্রেণীর (Class 9) মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্কগুলি তৈরি করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সমস্ত বিদ্যালয় আপাতত বন্ধ রয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে নিজের বিষয়ভিত্তিক খাতায় এগুলো করে বিদ্যালয় খুললে শিক্ষকের কাছে এই মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক (Mode Activity Task) জমা দেবে। কোন অবস্থাতেই তারা যেন বাড়ির বাইরে না বের হয় । তাই তোমাদের সুবিধার জন্য অতি সহজ ও সরলভাবে প্রশ্ন-উত্তরের সেট সাজানো হয়েছে।
তোমরা প্রশ্নের উত্তর লেখার আগে নিজেরা চেষ্টা করবে যে কতখানি তোমরা নিজেরা উত্তর করতে পারছো। সর্বশেষ কোন প্রকার উত্তর না পারলে আমাদের এই পোস্টটি থেকে Bengali First Language Part 1 এর প্রশ্নের উত্তরগুলি দেখে নিতে পারো।
Table of Contents
জানুয়ারী মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক পার্ট ১ ( নবম শ্রেণী )
বিষয় – বাংলা ( প্রথম ভাষা )
পূর্ণমান – ২০
January Model Activity Task Class 9 Part 1 Answer
( বাংলা (প্রথম ভাষা )
১. ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখাে : (১ x ৩ = ৩)
১.১ ‘অম্বিকামঙ্গল গান শ্রী কবিকঙ্কণ।’ ‘অম্বিকা’ হলেন –
(ক) দেবী লক্ষ্মী
(খ) দেবী মনসা
(গ) দেবী চণ্ডী
(ঘ) দেবী শীতলা
১.২ ‘সঘনে চিকুর পড়ে বেঙ্গ – তড়কা বাজ’। এক্ষেত্রে ‘চিকুর’ শব্দের অর্থ –
(ক) চুল
(খ) আকাশ
(গ) বিদ্যুৎ
(ঘ) বৃষ্টি
১.৩ যাঁর নাম স্মরণ করলে বজ্রপাত বন্ধ হয় বলে মানুষের বিশ্বাস, তিনি হলেন –
(ক) ব্যাসদেব
(খ) জৈমিনি
(গ) দেবী চণ্ডী
(ঘ) গজরাজ
২. কমবেশি ২০টি শব্দে উত্তর লেখাে : (১ x ৩ = ৩)
২.১ ‘দেখিতে না পায় কেহ অঙ্গ আপনার।
– কেন এমন পরিস্থিতি হয়েছিল?
উত্তর:- উদ্ধৃত অংশটি কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” কবিতা থেকে সংগৃহীত হয়েছে l
কলিঙ্গদেশের আকাশ ঘন কালো মেঘে আবৃত হয়ে যাওয়ায় দিনের বেলাতেই যেন রাতের আঁধার নেমে আসে, যার ফলে প্রজারা নিজেদের অঙ্গ দেখতে পায় না l
২.২ ‘বিপাকে ভবন ছাড়ি প্রজা দিল রড়।।
– প্রজারা কোন বিপাকে পড়েছিল ?
উত্তর:- কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” কবিতায় কলিঙ্গদেশে প্রচন্ড ঝড়ের দাপটে প্রজারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে প্রাণ রক্ষার্থে ভবন ছেড়ে বেরিয়ে গেল l “রড়” শব্দের অর্থ “ছুট” বা “দৌড়” l
২.৩ কলিঙ্গদেশে একটানা কতদিন বৃষ্টি চলেছিল?
উত্তর:- কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী লেখা “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” কবিতায় কলিঙ্গদেশে একটানা সাতদিন ধরে বৃষ্টি চলেছিল।
৩. প্রসঙ্গ নির্দেশসহ কম-বেশি ৬০টি শব্দে উত্তর লেখাে : (৩ x ৩ = ৯)
৩.১ ‘চারি মেঘে জল দেয় অষ্ট গজরাজ।
– ‘চারি মেঘ’ বলতে কী বােঝ? ‘অষ্ট গজরাজ’-এর পৌরাণিক অনুষঙ্গটি কী?
উত্তর:-
➣ কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” পদ্যাংশে চার প্রকার মেঘ জল দেয় l পুরান মতে সেই চার প্রকার মেঘ হল – সংবর্ত, আবর্ত, পুষ্কর ও দ্রোণ। আলোচ্য অংশে ‘চারিমেঘ’ বলতে মেঘের চারটি রূপ যথা – সম্বর্ত,আবর্ত,পুষ্কর এবং দ্রোণ-কে বোঝানো হয়েছে।
➣ ভারতীয় পুরাণ অনুযায়ী উত্তর, উত্তর পূর্ব, পূর্ব, দক্ষিণ পূর্ব, দক্ষিণ, দক্ষিণ পশ্চিম, পশ্চিম, উত্তর পশ্চিম পৃথিবীর এই আটটি দিকের রক্ষাকর্তা আটটি গজ বা হাতি। এই আটজন গজরাজ হলেন- ঐরাবত, পুণ্ডরীক, বামন, কুমুদ, অঞ্জন, পুষ্পদন্ত, সার্বভৌম এবং সুপ্রতীক। এদেরকে একত্রে অষ্টগজরাজ বলা হয়। কবিতা অনুসারে বলা যায় ঐ আটটি হাতি চাররকম মেঘের সাহায্যে কলিঙ্গদেশে প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটায়। ফলে সমগ্র কলিঙ্গদেশ জলমগ্ন হয়ে পড়ে।
৩.২ ‘ভাদ্রপদ মাসে যেন পড়ে থাকা তাল’ – কোন্ প্রসঙ্গে উদ্ধৃতিটির অবতারণা করা হয়েছে?
উত্তর:- উদ্ধৃতাংশটি কবিকঙ্কন মুকুন্দ চক্রবর্তীর “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” পদ্যাংশ থেকে সংগৃহীত হয়েছে l
কবি মুকুন্দরাম চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ‘ঝড় বৃষ্টি’ কাব্যাংশে কলিঙ্গদেশে যে ভয়াবহ মুষলধারে ঝড় বৃষ্টি হয়েছিল তার বর্ণনা করা হয়েছে। আকাশ কালো করা বিপুল মেঘরাশির বর্ষণে প্লাবন সৃষ্টি হয় কলিঙ্গে। টানা সাতদিনের অবিরাম বর্ষণের সঙ্গে নিরন্তর শিল পড়তে শুরু করে। ভাদ্র মাসে তাল পেকে যেমন গাছ থেকে পড়ে যায় ঠিক তেমনি ভাবে অত্যন্ত বড়ো আকারের শিল ঘরের চাল ভেদ করে মেঝেতে পড়ে প্রজাদের ঘরবাড়ি বিনষ্ট করে দেয়।
৩.৩ ‘চণ্ডীর আদেশ পান বীর হনুমান। – চণ্ডীর আদেশে বীর হনুমান কী করেছিল?
উত্তর:- উদ্ধৃতাংশটি কবিকঙ্কন মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” কাব্যাংশ থেকে সংগৃহীত হয়েছে l
“কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” কাব্যাংশে দেবী চণ্ডী বীর হনুমানকে কলিঙ্গদেশকে বিধ্বস্ত করার আদেশ দিয়েছিলেন। দেবী চণ্ডীর মায়ায় কলিঙ্গদেশের ওপর নেমে এসেছিল ভয়ানক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। কলিঙ্গদেশে মুষলধারে একটানা সাতদিন চলতে থাকা বৃষ্টি, বজ্রপাত, ঝড় এবং বন্যা, শিলাবৃষ্টির দাপট কলিঙ্গদেশের জন জীবন নষ্ট করে দেয়। কবি তাই বলেন, যেন দেবী চণ্ডীর আদেশে দুর্যোগ যেন বীর হনুমানের শক্তি ধরে কলিঙ্গদেশের সমস্ত মঠ, অট্টালিকা,ঘর-বাড়ির চাল ভেঙে ধুলিস্যাৎ করেছে।
৪. কম-বেশি ১৫০ শব্দে নীচের প্রশ্নটির উত্তর নিজের ভাষায় লেখাে : (৫)
‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ কাব্যাংশে অনুসরণে প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত জনজীবনের ছবি কীভাবে ফুটে উঠেছে, তা আলােচনা করাে।
উত্তর:- কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম চক্রবর্তী রচিত ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়বৃষ্টি’ নামক কাব্যাংশে দেখা যায় কলিঙ্গদেশে নেমে এসেছিল ঘোরতর প্রাকৃতিক বিপর্যয়। একটানা সাত দিন ধরে ক্রমাগত চলা ঝড়-বৃষ্টি সহ সমূহ বিপর্যয় জীবনযাত্রাকে নানাভাবে বিপন্ন করে তুলেছিল।
দেবীর আদেশে হঠাৎ করেই ঈশান কোনের ঘন কালো অন্ধকার মেঘের ঘনঘটা প্রজাদের বাসভূমি ছাড়তে বাধ্য করে। ধুলোর-ঝরে সারাবছরের আহারের জন্য উৎপাদিত সবুজ শস্য ধুলিস্যাৎ হয়ে যায়। বিপর্যয় দেখে কলিঙ্গবাসী দেবতা জৈমিনি-কে স্মরণ করতে থাকে।
সাত দিন ধরে সূর্যের আলো না-পেয়ে, জলজ পরিস্থিতিতে, প্রবল শিলা বৃষ্টির দাপটে ঘরবাড়ি ভেঙে খান খান হয়ে যায়। সমস্ত কলিঙ্গবাসী গৃহহীন হয়ে ওঠে। সাতদিন নিরন্তর প্রবল বর্ষণ কলিঙ্গের অধিবাসীদের সমূহ সর্বনাশ করে যায়। কলিঙ্গে স্থল আর জলের পার্থক্য করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। সমুদ্রের সমান ঢেউ কলিঙ্গবাসীদের ঘরবাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে যায়। দেবী চণ্ডীর আদেশে সৃষ্ট এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে অসহায় ভীত প্রজারা বিপদের আশঙ্কায় অবশেষে কলিঙ্গ ত্যাগ করে চলে যায়।
প্রিয় নবম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা উপরের January Class 9 Model Activity Task Part 1 এর সম্পূর্ণ ভাবে প্রশ্ন-উত্তর সহ আলোচনা করা হয়েছে। আশা রাখছি তোমাদের বা আপনাদের অনেকখানি সহায়তা করতে পেরেছি। পোস্টটি ভালো লেগে থাকলে অন্যদের শেয়ার করে তাদের সহায়তা করো বা করুন।