বাংলায় নীল বিদ্রোহের কারণগুলি উল্লেখ করো ।

প্রশ্ন:- বাংলায় নীল বিদ্রোহের কারণগুলি উল্লেখ করো ।

উত্তর:- ভূমিকা : ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে নীলচাষিদের ওপর নীলকর সাহেবদের অমানুষিক অত্যাচার ও নির্মম শোষণের বিরুদ্ধে ১৮৫৯-৬০ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় নীলচাষিদের সংঘবদ্ধ আন্দোলন নীলবিদ্রোহ নামে পরিচিত ।

 ▶ নীলচাষের পদ্ধতি : নীলকররা গরিব চাষিদের নিরক্ষরতার সুযোগ নিয়ে কম টাকা ‘দাদন’ দিয়ে বেশি টাকার চুক্তি করে তাদের নীলচাষ করাতে বাধ্য করত ।

নীলকর সাহেবদের অত্যাচার : কৃষকদের প্রতি নীলকরদের অত্যাচার, লুণ্ঠন, শোষণ, দৌরাত্ম্য, ব্যভিচার, লাম্পট্য ছিল এই বিদ্রোহের অন্যতম কারণ ।

নীলকরদের সরকারি সমর্থন : ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনে শ্বেতাঙ্গদের জমি কেনার অধিকার ও তারও আগে সরকারের দাদনি প্রথাকে সমর্থন, একাদশ আইন দ্বারা ‘দাদন’ গ্রহণকারী কৃষকদের নীলচাষ করতে বাধ্য করা প্রভৃতি কারণে তীব্র জনরোষের বহিঃপ্রকাশ ঘটে ।

নীলের কম দাম প্রদান : রায়তদের উৎপাদিত নীলের দাম দেওয়া হত ২ টাকা ৮ আনা অথচ সেই নীলের বাজার দর ছিল ১০ টাকা, অর্থাৎ প্রতি কেজি নীলে কৃষকদের ৭ টাকা ৮ আনা ঠকানো হত ।

পঞ্চম আইন : ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে লর্ড বেন্টিঙ্কের শাসনকালে পঞ্চম আইনে বলা হয়, ‘দাদন’ নিয়ে নীলচাষ না করলে তা বে – আইনি বলে গণ্য হবে এবং অপরাধীর জেল হবে ।

বাংলায় নীল বিদ্রোহের কারণগুলি উল্লেখ করো

পক্ষপাতদুষ্ট বিচারব্যবস্থা : নীলকরদের বিরুদ্ধে সরকারি আদালতে নালিশ করলেও শ্বেতাঙ্গ ম্যাজিস্ট্রেটরা স্ব – জাতীয় শ্বেতাঙ্গ নীলকরদের প্রতি পক্ষপাত দেখাতেন এবং মফস্সলে ভারতীয় বিচারকরা শ্বেতাঙ্গ নীলকরদের বিচার করতে পারত না ।

অন্যান্য বিদ্রোহের প্রভাব : ফরাজি, ওয়াহাবি, সাঁওতাল, কোল বিদ্রোহের ঘটনাক্রম নীলচাষিদের মনে সাহস সঞ্চার করে ।

উপসংহার : উপরিউক্ত নানা কারণে দিগম্বর বিশ্বাস, বিরুচরণ বিশ্বাস, বৈদ্যনাথ সর্দার, বিশ্বনাথ সর্দার, রহিম উল্লা, রফিক মণ্ডল, মহেশ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখের নেতৃত্বে নীলকর সাহেবদের বিরুদ্ধে বাংলার অনিচ্ছুক নীলচাষিদের বিদ্রোহ সংঘটিত হয় ।

╍╍╍╍╍╍╍╍╍╍ 🌸 ╍╍╍╍╍╍╍╍╍

  আপনি যদি এই পোস্টটি পড়তে পছন্দ করেন এবং এটি সহায়ক মনে করেন দয়া করে এটি আপনার বন্ধুদের এবং পরিবারের সাথে ভাগ করুন। এই পোস্টটি ভাগ করে নেওয়ার জন্য আপনার একটি পয়সাও খরচ হবে না তবে এটি কারও দিন তৈরি করতে পারে।

Leave a Comment