দেশাত্মবোধ ও জাতীয় সংহতি

ভূমিকা:— “এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে না কো তুমি সকল দেশের রানি সে যে আমার জন্মভূমি”-এ শুধু একজন বাঙালি কবির কথা নয়। উল্লিখিত পঙক্তি দুটি পৃথিবীর যে-কোনো দেশের, যে-কোনো দেশপ্রেমিক মানুষের মনের কথা। প্রত্যেক মানুষ তার দেশকে ভালোবাসে এবং এই ভালোবাসাবোধ থেকেই দেশের মানুষের মধ্যে গড়ে ওঠে জাতীয় সংহতি।

দেশাত্মবোধ:— দেশাত্মবোধ হল একজন মানুষের নিজের দেশের প্রতি ভালোবাসা। সেই ভালোবাসা মানুষকে দেশের উন্নতি, সুনাম ও প্রতিটি মানুষের মঙ্গল কামনায় উৎসাহ জোগায়। যে মানুষ তাঁর দেশের প্রতিটি মানুষকে সমানভাবে ভালোবাসে তার দেশাত্মবোধ হল খাঁটি। এই দেশাত্মবোধের জন্যই কোনো মানুষ নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে দেশের স্বার্থকে বড়ো করে দেখে। দেশাত্মবোধ মানুষকে তার দেশের ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল করে তোলে।

জাতীয় সংহতির প্রয়োজনীয়তা:— সংহতি ছাড়া কোনো দেশ কখনও উন্নতি লাভ করতে পারে না। বিশেষত ভারতের মতো নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধানের দেশে জাতীয় সংহতি বা মিলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষুদ্র আঞ্চলিকতা, সংস্কারকে দূরে ঠেলে প্রতিটি মানুষের মধ্যে ঐক্যবোধ জাগ্রত করাকেই জাতীয় সংহতি বলা হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ভারততীর্থ’ কবিতাতেও এই সংহতির কথা আছে। জাতীয় সংহতি না থাকলে যে-কোনো দেশই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ে। খেলাধুলা, বিজ্ঞানচর্চা, শিল্প, বাণিজ্য প্রভৃতি সবক্ষেত্রেই জাতীয় সংহতির বিশেষ প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। যে দেশের মানুষের মধ্যে জাতীয় সংহতি আছে, পৃথিবীর ইতিহাসে তারাই সবথেকে শক্তিশালী। বর্তমান ভারতে জাতীয় সংহতির অভাব অনেক সময় শুভবুদ্ধিসম্পন্ন নাগরিকদের কাছে লজ্জাজনক আর বেদনাদায়ক হয়ে ওঠে। তাই সকল ভারতবাসীকেই জাতীয় সংহতির বিষয়ে যত্নবান হতে হবে। মনে রাখতে হবে, “দশে মিলি করি কাজ/হারি জিতি নাহি লাজ।”

উপসংহার:— দেশাত্মবোধের সঙ্গে জাতীয় সংহতি ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত। দেশবাসীর মনে দেশাত্মবোধ না থাকলে জাতীয় সংহতি কখনও গড়ে উঠবে না। তবে এই প্রসঙ্গে একটা কথা মনে রাখা উচিত, উগ্র দেশপ্রেম কখনও সমর্থনযোগ্য নয়। কারণ তা অনেকসময় অন্যের কাছে ক্ষতিকারক হয়ে উঠতে পারে।

╍╍╍╍╍╍╍╍╍╍ 🌸 ╍╍╍╍╍╍╍╍╍

প্রিয় ছাত্র- ছাত্রীরা উপরের এর সম্পূর্ণ ভাবে প্রশ্ন-উত্তর সহ আলোচনা করা হয়েছে।আশা রাখছি তোমাদের বা আপনাদের অনেকখানি সহায়তা করতে পেরেছি। পোস্টটি ভালো লেগে থাকলে অন্যদের শেয়ার করে তাদের সহায়তা করো বা করুন।

Leave a Comment