‘WB Institute’ এর পক্ষ থেকে সকলকে জানাই সাদর আমন্ত্রন। আমরা এই পর্বে মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক ক্লাস ৯ পার্ট ১ ( Model Activity Task Class 9 Part 1) – এর ভূগোল (Geography) এই বিষয়ের প্রশ্ন-উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
আমাদের প্রিয় নবম ছাত্র-ছাত্রীরা,
আমরা পাঠ্যসূচিকে ভিত্তি করে মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্কগুলি তৈরি করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সমস্ত বিদ্যালয় আপাতত বন্ধ রয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে নিজের বিষয়ভিত্তিক খাতায় এগুলো করে বিদ্যালয় খুললে শিক্ষকের কাছে এই মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক (Model Activity Task) জমা দেবে। তাই তোমাদের সুবিধার জন্য অতি সহজ ও সরলভাবে প্রশ্ন-উত্তরের সেট সাজানো হয়েছে।
Table of Contents
জানুয়ারী মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক পার্ট ১ ( নবম শ্রেণী )
বিষয় – ভূগোল
পূর্ণমান – ২০
January Model Activity Task Class 9 Part 1 Answer
( ভূগোল )
১. বিকল্পগুলি থেকে ঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখো : (১ ×৩ = ৩)
১.১ উত্তর মেরুতে ধ্রুবতারার উন্নতি কোণ হলো—
(ক) ৬০°
(খ) ০°
(গ) ৯০°
(ঘ) ৪৫°
১.২ যে অক্ষরেখায় পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের মান সর্বনিম্ন তা হলো—
(ক) নিরক্ষরেখা
(খ) সুমেরুবৃত্ত রেখা
(গ) কর্কটক্রান্তি রেখা
(ঘ) মকরক্রান্তি রেখা
১.৩ ঠিক জোড়টি নির্বাচন করো –
(ক) পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ মেরু সংযোগকারী কাল্পনিক রেখা — নিরক্ষরেখা
(খ) সাবমেরিন চালনা GPS
(গ) পৃথিবীর উপর চাঁদের ছায়া — চন্দ্রগ্রহণ
(ঘ) সৌরজগতের উষ্ণতম গ্যাসীয় গ্রহ – বুধ
২.১ উপযুক্ত শব্দ বসিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো : (১ ×২ = ২)
২.১.১ সৌরজগতের আটটি গ্রহের মধ্যে _____________ গ্রহের ঘনত্ব সর্বাধিক।
উত্তর:- সৌরজগতের আটটি গ্রহের মধ্যে পৃথিবী গ্রহের ঘনত্ব সর্বাধিক।
২.১.২ পৃথিবীর পরিধি প্রথম নির্ণয় করেন গ্রিক পণ্ডিত _____________ ।
উত্তর:- পৃথিবীর পরিধি প্রথম নির্ণয় করেন গ্রিক পণ্ডিত এরাটোসথেনিস।
২.২ একটি বা দুটি শব্দে উত্তর দাও : (১×৩ = ৩)
২.২.১ GPS- এর পুরো কথাটি কী ?
উত্তর:- GPS- এর পুরো কথাটি হলো — ‘গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম’ (Global Positioning System)
২.২.২ পৃথিবীর মেরু ব্যাস কত কিলোমিটার ?
উত্তর:- পৃথিবীর মেরু ব্যাস 12,714 কিলোমিটার l
২.২.৩ কোন বহিঃস্থ গ্রহের ব্যাস সর্বাধিক ?
উত্তর:- বহিঃস্থ গ্রহ “বৃহস্পতি” -এর ব্যাস সর্বাধিক।
৩. নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও : (২ ×২ = ৪)
৩.১ সৌরজগতের অস্তঃস্থ ও বহিঃস্থ গ্রহগুলির মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো ।
উত্তর:-
বিষয় | অন্তঃস্থ গ্রহ | বহিঃস্থ গ্রহ |
(১) সূর্য থেকে দুরত্ব | অন্তঃস্থ বলে সূর্য থেকে দূরত্ব কম। | বহিঃস্থ বলে সূর্য থেকে দূরে অবস্থিত। |
(২) আকার ও ক্ষেত্র মান | অন্তঃস্থ গ্রহের আকার ও ক্ষেত্রমান ছোট | বহিঃস্থ গ্রহের আকারও ক্ষেত্রমান বড়ো |
(৩) উপগ্রহের সংখ্যা | অন্তঃস্থ গ্রহের উপগ্রহের সংখ্যা কম | বহিঃস্থ গ্রহের উপগ্রহ সংখ্যা বেশি |
(৪) উষ্ণতা | সূর্যের কাছে অবস্থান করায় উয়তা খুব বেশি। | সূর্য থেকে দূরে অবস্থিত হওয়ায় শীতল হয়। |
৩.২. বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হয় । —এর ভৌগোলিক কারণ ব্যাখ্যা করো ।
উত্তর:- “বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হয়” -এর ভৌগোলিক কারণ –
পৃথিবীর সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত হওয়ার পিছনে রয়েছে পৃথিবীর আবর্তন গতি। এই আবর্তন গতি অনুযায়ী পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আবর্তন করছে। তৎসঙ্গে উত্তর থেকে দক্ষিনে বিস্তৃত কাল্পনিক রেখা গুলি আবর্তন করছে। প্রতিটি দ্রাঘিমা রেখা প্রতিদিন একবার করে সূর্যের সামনে আসে। পৃথিবীর বিভিন্ন দ্রাঘিমা রেখার স্থানীয় সময় বিভিন্ন হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ এবং বিভিন্ন স্থানের উপর দিয়ে যেহেতু বিভিন্ন দ্রাঘিমারেখা প্রসারিত হয়েছে সেহেতু সীমারেখার স্থানীয় সময়ও ভিন্ন। তাই বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত হয়।
৪. নীচের প্রশ্নটির উত্তর দাও : (৩×১ = ৩)
‘জিয়ড’ – এর ধারণাটি সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
উত্তর:- পৃথিবীর আকৃতি অভিগত গোলকের মত হলেও পৃথিবীকে যে একটি আদর্শ অভিগত গোলক বলা যায় না তার কারণ- সমুদ্রতল, পাহাড়, পর্বত এবং মালভূমি ভূপৃষ্ঠকে উঁচু-নিচু ঢেউ খেলানো এবং বন্ধুর রূপ দান করেছে। সারা পৃথিবীর স্থলভাগের গড় উচ্চতা ৮৭৫ মিটার ও সমুদ্রের গড় গভীরতা ৩৬৮৮ মিটার। অতএব গড় উচ্চতার পার্থক্য ৮৫৬৩ মিটার। অর্থাৎপৃথিবীর ওপরটা মোটেই মসৃণ না। সুতরাং পৃথিবীর আকৃতির সঙ্গে আমরা পরিচিত কোন আকৃতির তুলনা করতে পারি না। তাই বলা হয় ‘পৃথিবীর আকৃতি পৃথিবীর মতো। পৃথিবীর এই আকৃতিকেই আমরা বলি জিয়ড।
পৃথিবী থেকে সম্প্রতি যেসব কৃত্রিম উপগ্রহ (Satellite) পাঠানাে হয়েছে তাদের দূর সংবেদনে (Remote sensing) ধরা পড়েছে যে –
(১) পৃথিবী পুরোপুরি গোল নয়। পৃথিবীর ওপর-নীচ কিছুটা অংশ আর মাঝ বরাবর কিছুটা ফোলা।
(২) দক্ষিণ মেরু 20 মিটার অতি নীচু এবং উত্তর মেরু 20 মিটার অতি উঁচু।
(৩) পৃথিবী শুধুমাত্র দক্ষিণ মেরুর দিকে চাপা উত্তর মেরু চাপা নয়।
(৪) পৃথিবীর মধ্যভাগ খানিকটা স্ফীত- প্রায় 43 কিলোমিটার।
(৫) দক্ষিণ গোলার্ধের মধ্যে অক্ষাংশ 8 মিটার ফুলে উঠেছে আর উত্তর গোলার্ধের মধ্যে অক্ষাংশ 8 মিটার বসে গিয়েছে ।
কমলালেবু বা ন্যাসপাতির সঙ্গে পৃথিবীর আকৃতির কিছুটা মিল থাকলেও আসলে পৃথিবীর আকৃতি কে অন্য কোন আকৃতির সঙ্গে মেলানো যায় না। তাই বলা হয় যে পৃথিবীর প্রকৃত আকৃতি পৃথিবীর মতো যাকে ইংরেজিতে বলা হয় জিয়ড (Geoid= Earth shaped) গ্রিক শব্দ Geoeides থেকে আসা জিয়ড (Geoid) শব্দের অর্থ হলো ‘পৃথিবীর মতো’।
৫. নীচের প্রশ্নটির উত্তর দাও : (৫ ×১ = ৫)
‘সৌর জগতের বিভিন্ন গ্রহগুলির মধ্যে পৃথিবীই একমাত্র জীবজগতের আবাসস্থল।’— বক্তব্যটির যথার্থতা বিচার করো ।
উত্তর:- পৃথিবী হল সৌরপরিবারের একমাত্র গ্রহ যেখানে প্রাণ আছে এবং প্রাণের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য সব রকমের উপকরণ ও উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত আছে।
(১) মানুষের আবাসস্থলরূপে পৃথিবী:- পৃথিবী হল সৌরপরিবারের একমাত্র গ্রহ যেখানে প্রাণ আছে এবং প্রাণের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য সব রকমের উপকরণ ও উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত আছে।
(২) সূর্য থেকে দূরত্ব ও উষ্ণতা:- সূর্য থেকে পৃথিবী এমন দূরত্বে রয়েছে যে পৃথিবীর গড় উষ্ণতা ১৭° সেন্টিগ্রেড- যা জীবকুল বেঁচে থাকার সহায়ক কিন্তু সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহগুলি ৫০০° সে ও দূরের গ্রহগুলি ২০০° হিমাঙ্কের নীচে বিরাজমান যা জীবনের জন্য প্রতিকূল।
(৩) বায়ুমন্ডল:- পৃথিবীতেই একমাত্র বায়ুমন্ডল আছে। পৃথিবীর উপরে ১০,০০০ কিমি পর্যন্ত অংশ বায়ুমন্ডলের অন্তর্গত। বায়মন্ডলে অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড ও অন্যান্য গ্যাস জলীয় বাষ্প, ধূলিকণা আছে বলেই আবহাওয়া, জলবায়ুর ঘটনাসমূহ বায়ুমন্ডলেই ঘটে, বায়ুমন্ডলের ওজোন স্তর ক্ষতিকারক অতি বেগুনি রশ্মিকে শোষণ করে পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে তুলেছে।
(৪) জল:- পৃথিবীর ৭০% জলে পূর্ণ যা প্রাণ সৃষ্টি হওয়ার ও বজায় থাকার অন্যতম প্রধান শর্ত। তাই পৃথিবীকে জল গ্রহ বা নীল গ্রহ বলা হয়। জল যেমন জলচক্রে অংশগ্রহণ করে তেমনি মহাসমুদ্র উষ্ণতাকে নিয়ন্ত্রণ করে।
(৫) ভূত্বক বা শিলামন্ডল:- পৃথিবীর উপরে রয়েছে কঠিন আবরণ ভুত্বক, যাতে রয়েছে শিলা, মাটি ও বিভিন্ন খনিজ দ্রব্য। মাটির উপরে জীবনের উৎপাদক উদ্ভিদ জন্মায়, নানারকম খনিজ পাওয়া যায়।
(৬) মানুষের আবাসস্থলরূপে পৃথিবী:- পৃথিবী হল সৌরপরিবারের একমাত্র গ্রহ যেখানে প্রাণ আছে এবং প্রাণের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য সব রকমের উপকরণ ও উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত আছে।
এইসকল কারণে সৌরজগতের সকল গ্রহের মধ্যে একমাত্র পৃথিবী জীবের আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে।
আপনি যদি এই পর্বটি পড়তে পছন্দ করেন এবং এটি সহায়ক মনে করেন দয়া করে এটি আপনার বন্ধুদের এবং পরিবারের সাথে ভাগ করুন। এই পর্বটি ভাগ করে নেওয়ার জন্য আপনার একটি পয়সাও খরচ হবে না তবে এটি কারও দিন তৈরি করতে পারে।