‘WB Institute’ এর পক্ষ থেকে সকলকে জানাই সাদর আমন্ত্রন। আমরা এই পর্বে মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক ক্লাস ১০ পার্ট ২ ( Model Activity Task Class 10 Part 2) – এর ভূগোল (Geography) এই বিষয়ের প্রশ্ন-উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
আমাদের প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীরা,
আমরা পাঠ্যসূচিকে ভিত্তি করে মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্কগুলি তৈরি করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সমস্ত বিদ্যালয় আপাতত বন্ধ রয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে নিজের বিষয়ভিত্তিক খাতায় এগুলো করে বিদ্যালয় খুললে শিক্ষকের কাছে এই মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক (Model Activity Task) জমা দেবে। তাই তোমাদের সুবিধার জন্য অতি সহজ ও সরলভাবে প্রশ্ন-উত্তরের সেট সাজানো হয়েছে।
Table of Contents
ফেব্রুয়ারি মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক পার্ট ২ ( দশম শ্রেণী )
বিষয় – ভূগোল
পূর্ণমান – ২০
February Model Activity Task Class 10 Part 2 Answer
( গণিত )
১. বিকল্পগুলি থেকে ঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখাে : (১×৩ = ৩)
১.১ বায়ুমণ্ডলের যে স্তরে প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল আবহাওয়া লক্ষ করা যায় সেটি হলাে –
(ক) আয়নােস্ফিয়ার
(খ) স্ট্রাটোস্ফিয়ার
(গ) এক্সোস্ফিয়ার
(ঘ) ট্রপােস্ফিয়ার
১.২ যে বায়ুকে তুষার ভক্ষক বলা হয় তা হলাে –
(ক) লু
(খ) আঁধি
(গ) চিনুক
(ঘ) খামসিন
১.৩ উপক্ৰান্তীয় উচ্চচাপ বলয় অবস্থান করে –
(ক) ৬০° – ৭০° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যে
(খ) ২৫° – ৩৫° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যে
(গ) ১০° – ২০° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যে
(ঘ) ৭০° – ৮০° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যে
২.১ বাক্যটি সত্য হলে ‘ঠিক’ এবং অসত্য হলে ‘ভুল’ লেখাে: (১×৩ = ৩)
২.১.১ কোনাে নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ুতে যে পরিমাণ জলীয় বাষ্প থাকে তাকে ঐ বায়ুর আপেক্ষিক আদ্রর্তা বলে।
২.১.২ দক্ষিণ গােলার্ধে স্থলভাগের বিস্তার বেশি হওয়ার কারণে পশ্চিমা বায়ু অপ্রতিহত গতিতে প্রবাহিত হয়।
২.১.৩ সমুদ্রবায়ু দিনের বেলায় প্রবাহিত হয়।
২.২ একটি বা দুটি শব্দে উত্তর দাও : (১x২ = ২)
২.২.১ একই উষ্ণতাযুক্ত স্থানগুলিকে মানচিত্রে যে রেখা দ্বারা যুক্ত করা হয় তাকে কী বলে?
উত্তর:- একই উষ্ণতাযুক্ত স্থানগুলিকে মানচিত্রে যে রেখা দ্বারা যুক্ত করা হয় তাকে সমোষ্ণ রেখা l
২.২.২ কোন যন্ত্রের সাহায্যে বায়ুর চাপ পরিমাপ করা হয়?
উত্তর:- ব্যারোমিটার যন্ত্রের সাহায্যে বায়ুর চাপ পরিমাপ করা হয় |
৩. নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও : (২x২= ৪)
৩.১ কুয়াশাকে কেন অধঃক্ষেপণ বলা হয় না?
উত্তর:- অধঃক্ষেপণে জলীয় বাষ্পপূর্ণ ঊর্ধ্বগামী বায়ু অতিরিক্ত শীতলতার কারণে ঘনীভূত হয়ে জলকণা বা তুষারকণায় পরিণত হয়ে ভারী হলে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে জল বা তুষার বিন্দুরূপে ভূপৃষ্ঠে নেমে আসে। কিন্তু কুয়াশা কোন প্রকার ঊর্ধ্বগামী বায়ু থেকে সৃষ্টি হয় না। সাধারণত শীতকালের রাতে ভূপৃষ্ঠ তাপ বিকিরণ করে ঠান্ডা হলে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুও ঠান্ডা হয়। তখন ওই বায়ুর তাপমাত্রা শিশিরাঙ্কে পৌঁছালে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ভাসমান ধূলিকণাকে আশ্রয় করে ভূমি সংলগ্ন অংশে ভেসে বেড়ায়। সুতরাং কুয়াশা উপর থেকে অধঃক্ষিপ্ত হয় না বলে এটি অধঃক্ষেপণ নয়।
৩.২ বিশ্ব উষ্ণায়নের দুটি প্রভাব উল্লেখ করাে।
উত্তর:- বিশ্ব উষ্ণায়নের দুটি প্রভাব হলাে –
(i) জলবায়ু পরিবর্তন:- পৃথিবীর উষ্ণতা ক্রমশ বেড়ে যাওয়ার জন্য শীতের তুলনায় গ্রীষ্মের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, প্রায় প্রতিটি ঋতুর আগমন অনিয়মিত ও বিলম্বিত হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা ও তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং খরার প্রাদুর্ভাব বাড়ছে।
(ii) হিমবাহের মাত্রাতিরিক্ত গলন:– ভূমণ্ডলের উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ার জন্য অ্যান্টার্কটিকা ও গ্রিনল্যান্ডের অসংখ্য হিমবাহ ও বিশালাকৃতি বরফের চাদর (lce Sheet) সহ পৃথিবীর বিভিন্ন পার্বত্য হিমবাহ গলে যাওয়ার জন্য ক্রমশই সংকুচিত হচ্ছে অর্থাৎ এদের আয়তন হ্রাস পাচ্ছে। যেমন—হিমালয়ের গঙ্গোত্রী, যমুনােত্রী প্রভৃতি হিমবাহ।
৪. নীচের প্রশ্নটির উত্তর দাও : (৩×১ = ৩)
কীভাবে কোনাে একটি স্থানের উচ্চতা সেই অঞ্চলের বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রাকে প্রভাবিত করে? (৫)
উত্তর:- সূর্য থেকে বিকিরণ পদ্ধতিতে আগত তাপশক্তি বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে এলেও বায়ুমণ্ডলকে সরাসরিভাবে উত্তপ্ত না-করে প্রথমে কঠিন ভূপৃষ্ঠকে উত্তপ্ত করে। পরে ওই উত্তপ্ত বায়ু ভূপৃষ্ঠের সংস্পর্শে আসলে ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ুস্তর উত্তপ্ত হয় এবং ওই তাপ ধীরে ধীরে ওপরের বায়ুস্তরে সঞ্চারিত হয়। তাই নীচের বায়ুস্তরের তাপমাত্রা বেশি হয় এবং যত উপরে ওঠা যায় বায়ুর তাপমাত্রা ততই কমতে থাকে। সাধারণত প্রতি 1 কিলােমিটার উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য 6.4° সেলসিয়াস হারে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা কমতে থাকে, একে উষ্ণতা হ্রাসের গড় বা Lapse rate of temperature বলে। এই কারণেই একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও উচ্চস্থান অপেক্ষাকৃত শীতল হয়।
উদাহরণ:- উগান্ডার রাজধানী কাম্পালা (উচ্চতা ১১৯০ মিটার) এবং ইকুইডরের রাজধানী কুইটো (উচ্চতা ২৮৫০ মিটার ) প্রায় একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও উচ্চতা বেশি হওয়ায় কাম্পালার চেয়ে কুইটোর গড় তাপমাত্রা ৮.৫°C কম ।
নীচের প্রশ্নটির উত্তর দাও : (৫x১ = ৫)
চিত্রসহ উষ্ণতার তারতম্যের ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
উত্তর:- উষ্ণতার তারতম্যের ওপর ভিত্তি করে বায়ুমণ্ডলকে প্রধানত ছয়টি স্তরে ভাগ করা যায়, যথা —
(1) ট্রপোস্ফিয়ার
(2) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার
(3) মেসোস্ফিয়ার
(4) আয়নোস্ফিয়ার
(5) এক্সোস্ফিয়ার
(6) ম্যাগনেটোস্ফিয়ার
(1) ট্রপোস্ফিয়ার:-
অবস্থান- বায়ুমন্ডলের একেবারে নীচের সর্বাধিক ঘনত্বযুক্ত স্তরটির নাম ট্রপোস্ফিয়ার বা ক্ষুব্ধমন্ডল ।
বিস্তার- নিরক্ষীয় অঞ্চলে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৬-১৮ কিমি. ও মেরু অঞ্চলে ৮ – ৯ কিমি. (গড় উচ্চতা ১২ কিমি.) উচ্চতা পর্যন্ত এই স্তর বিস্তৃত ।
বৈশিষ্ট্য – এই স্তরের প্রতি হাজার মিটার উচ্চতায় বায়ুর উষ্ণতা ৬.৪°C হারে কমতে থাকে । এই কারণে ট্রপস্ফিয়ারের শেষ সীমায় বায়ুর উষ্ণতা কমে হয় প্রায় -৫৫°C থেকে -৬৬°C । মেঘের সৃষ্টি , বায়ুপ্রবাহ , ঘূর্ণবাত , টর্নেডো , বৃস্টিপাত , বজ্রপাত প্রভৃতি ঘটনা এই স্তরেই কেবল ঘটে থাকে ।
(2) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার:-
অবস্থান- ট্রপোস্ফিয়ারের ঠিক উর্ধে বায়ুমন্ডলের দ্বিতীয় স্তরটির নাম স্ট্রাটোস্ফিয়ার বা শান্তমন্ডল ।
বিস্তার- ট্রপোস্ফিয়ারের ওপরের ১২-৫০ কিলো মিটার উচ্চতা পর্যন্ত এই স্তর বিস্তৃত
বৈশিষ্ট্য – স্ট্রাটোস্ফিয়ার স্তরে ধূলিকণা, মেঘ প্রভৃতি না-থাকায় এখানে ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রপাত প্রভৃতি প্রাকৃতিক ঘটনা ঘটে না । স্ট্রাটোস্ফিয়ারের উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বায়ুর উষ্ণতা ৫০ কিমি. উচ্চতায় বেড়ে হয় প্রায় 0°C ।
(3) মেসোস্ফিয়ার:-
অবস্থান – স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ঠিক উপরের স্তরটির নাম মেসোস্ফিয়ার বা মধ্যমন্ডল ।
বিস্তার – স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ওপর ৫০ – ৮০ কিমি উচ্চতা পর্যন্ত এই স্তর বিস্তৃত ।
বৈশিষ্ট্য – এই স্তর থেকে উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বায়ুর উষ্ণতা ক্রমশ কমতে থাকে এবং ৮০ কিমি. উচ্চতায় উষ্ণতা কমে হয় প্রায় – ৯৩°C ।
মহাকাশ থেকে যেসব উল্কা পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে সেগুলি এই স্তরের মধ্যে এসে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ।
(4) আয়নোস্ফিয়ার:-
অবস্থান – মেসোস্ফিয়ারের ঠিক ওপরের স্তরটিকে আয়নোস্ফিয়ার বলে । আয়নোস্ফিয়ারের ওপরের অংশটিকে থার্মোস্ফিয়ার বলে ।
বিস্তার – মেসোস্ফিয়ারের ওপর ৮০ – ৬০০ কিমি. উচ্চতা পর্যন্ত এই স্তর বিস্তৃত ।
বৈশিষ্ট্য – এই স্তরে উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা অতি ধ্রুত হারে বাড়তে থাকে এবং উর্ধ্ব সীমায় তাপমাত্রা হয় প্রায় ১২০০০C । এই স্তরেই সুমেরুতে সুমেরু প্রভা ও কুমেরুতে কুমেরুপ্রভা নামে মেরুজ্যোতি সৃষ্টি হয় ।
(5) এক্সোস্ফিয়ার:-
অবস্থান – আয়নোস্ফিয়ারের পরবর্তী স্তরটির নাম এক্সোস্ফিয়ার বা বহিঃমন্ডল ।
বিস্তার – আয়নোস্ফিয়ারের ওপর ৬০০ – ১৫০০ কিমি. উচ্চতা পর্যন্ত এই স্তর বিস্তৃত ।
বৈশিষ্ট্য – এই স্তরের উষ্ণতা প্রায় ১২০০০C থেকে ১৬০০০C । এই স্তর থেকে বায়বীয় কণাগুলি ক্রমাগত মহাশূন্যে নির্গত হয় ।
(6) ম্যাগনেটোস্ফিয়ার:-
অবস্থান – এক্সোস্ফিয়ারের পরবর্তী স্তর ম্যাগনেটোস্ফিয়ার বা চৌম্বক মন্ডল নামে পরিচিত ।
বিস্তার – এক্সোস্ফিয়ারের ওপর ১৫০০ – ১০০০০ কিমি. বা তারও বেশি অর্থাৎ উর্ধ্বসীমা অনির্দিষ্ট ।
বৈশিষ্ট্য – এই স্তরটি ধীরে ধীরে বায়ুশূন্য হয়ে মহাশূন্যে বিলীন হয়ে যায় ।এই স্তরে তড়িৎচুম্বকীয় শক্তির প্রভাবে ইলেকট্রন ও মুক্ত আয়নগুলি সংবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে ।
আপনি যদি এই পোস্টটি পড়তে পছন্দ করেন এবং এটি সহায়ক মনে করেন দয়া করে এটি আপনার বন্ধুদের এবং পরিবারের সাথে ভাগ করুন। এই পোস্টটি ভাগ করে নেওয়ার জন্য আপনার একটি পয়সাও খরচ হবে না তবে এটি কারও দিন তৈরি করতে পারে।