▪ ভূমিকা:— বিশ্বের যে খেলাগুলিকে নিয়ে ক্রীড়াপ্রেমী মানুষের মধ্যে মাতামাতি লক্ষ করা যায়, তাদের মধ্যে অন্যতম হল কোপা আমেরিকা। এটি দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের একটি নিয়মিত ফুটবল প্রতিযোগিতা। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে এই টুর্নামেন্ট শুরু হলেও বর্তমান। রূপটি নেয় ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে। বর্তমানে বারোটি দেশ এই খেলায়। অংশগ্রহণ করে। ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দ থেকে উত্তর আমেরিকা ও এশিয়ার দুটি দেশকে এই টুর্নামেন্টের অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
▶ ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের কোপা আমেরিকা টুর্নামেন্ট:— কোপা আমেরিকা প্রতিযোগিতার ৪৪তম আসর ছিল কোপা আমেরিকা ২০১৫। এই টুর্নামেন্টের আয়োজক ছিল দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘কনমেবল’। মোট বারোটি দল এতে অংশগ্রহণ করেছিল। ১১ জুন ২০১৫ থেকে ৪ জুলাই ২০১৫ পর্যন্ত চিলিতে এই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়।
▶ আয়োজক দেশসমূহ:— কনমেবলের নীতি অনুযায়ী ২০১৫-র কোপা আমেরিকা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ব্রাজিলে। কিন্তু পরপর তিনটি সুবৃহৎ খেলাধুলার আসর আয়োজন করার গুরুদায়িত্ব পালনের পর তারা কোপা আমেরিকা আয়োজন করতে চায়নি। মেক্সিকো কনমেবলের সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও কনমেবলের প্রেসিডেন্ট মেক্সিকোতে তা আয়োজন করতে ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। অবশেষে প্রতিযোগিতাটি। আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয় চিলি-কে। চিলির আটটি শহরের মোট নয়টি স্টেডিয়ামে প্রতিযোগিতার খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
▶ প্রতিযোগী দলসমূহ:— ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের কোপা আমেরিকা প্রতিযোগিতায় যে দেশগুলি অংশগ্রহণ করেছিল, তাদের নাম- আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া, ব্রাজিল, চিলি, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, জামাইকা, মেক্সিকো, প্যারাগুয়ে, পেরু, উরুগুয়ে ও ভেনেজুয়েলা। প্রাথমিকভাবে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল মেক্সিকো ও জাপানকে। কিন্তু জাপান আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করলে চিনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ২০১৮ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে অংশগ্রহণ করার জন্য চিনও প্রত্যাখ্যান করে। অবশেষে জামাইকা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।
▶ জন্ম ও শিক্ষাজীবন:— ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ১৫ অক্টোবর তামিলনাডুর রামেশ্বরমে এক অতি সাধারণ নিম্নবিত্ত মৎস্যজীবী পরিবারে জন্ম নেন কালাম। তাঁর সম্পূর্ণ নাম আবুল পাকির জইনুল আবেদিন আবদুল কালাম। তাঁর পিতা জইনুল আবেদিন ও মাতা আসিয়াম্মা। দারিদ্র্য সত্ত্বেও ছেলেকে নিয়ে উভয়ই অনেক উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণ করতেন। পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী কালাম কৃতিত্বের সঙ্গে ম্যাট্রিক পাস করেন। এরপর ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে তিরুচিরাপল্লির সেন্ট জোসেফ কলেজ থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক হয়ে ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি চেন্নাইতে যান। ভারতীয় বায়ুসেনার বিমানচালক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে চেন্নাইতে এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভরতি হন। কিন্তু ভাগ্য তাকে নিয়ে আসে বিশ্বসেরা পরমাণু বিজ্ঞানীর ভূমিকায়।
▶ কর্মজীবন:— জীবনের শুরুর দিকে কালাম ‘ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ বিভাগে বৈজ্ঞানিক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনে যোগ দেওয়ার আগে কিছুদিন প্রধানমন্ত্রীর বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা হিসেবেও তিনি কাজ করেন। অগ্নি ও পৃথ্বী মিসাইল প্রকল্পে অংশগ্রহণ তাঁকে বিজ্ঞানী হিসেবে শ্রেষ্ঠত্ব দেয়। মহাকাশযান ও স্যাটেলাইট বহনকারী PSL V এবং SLV-III রকেট তৈরিতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতের পরমাণু অস্ত্রপরীক্ষার জন্য ‘পোখরান ২’ প্রকল্পের কর্ণধার নিযুক্ত হন কালাম। ২০০২ থেকে ২০০৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই কাজপাগল মানুষটি ভারতবর্ষের একাদশতম রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব সাফল্যের সঙ্গে পালন করেন।
▶ প্রাপ্তি ও অবদান:— দেশ-বিদেশের নানাবিধ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন অসাধারণ মেধাবী এই মানুষটি। ভারতবর্ষ ও বিদেশের প্রায় চল্লিশটি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক ডক্টরেট উপাধি প্রদান করেছে। এ ছাড়াও ‘পদ্মভূষণ’, ‘পদ্মবিভূষণ’, ‘ভারতরত্ন’ ইত্যাদি সম্মান শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা হিসেবে তাঁর মাথায় উঠেছে। এ ছাড়াও আজীবন বহু মূল্যবান গ্রন্থও রচনা করেছেন আবদুল কালাম। তাঁর আত্মজীবনী ‘উইংস অফ ফায়ার’ছাড়াও ইন্ডিয়া টু থাউজেন্ড টুয়েন্টি’, ‘ইগনাইটেট মাইন্ডস’, ‘মিশন ইন্ডিয়া’, ‘ইন্সপায়ারিং থটস্’ ইত্যাদি তাঁর বহু সমাদৃত বইগুলির মধ্যে অন্যতম।
▪ উপসংহার:— ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ২৭ জুলাই শিলং-এ বক্তৃতা দিতে দিতেই জ্ঞান হারিয়ে এই বিখ্যাত মানুষটি চিরনিদ্রার দেশে চলে যান। ভারতবর্ষ তাঁর এই জ্ঞানী সন্তানের অভাব কখনোই পূরণ করতে পারবে না।
╍╍╍╍╍╍╍╍╍╍ 🌸 ╍╍╍╍╍╍╍╍╍
আশা করছি উপরের পোস্টটি তোমার বা আপনার প্রশ্নের উত্তর খোঁজার কাজে অনেকখানি সাহায্য করেছে। যদি এই পোস্টটি তোমার জন্য বা আপনার জন্য সহায়তা করে থাকে তাহলে এই পোস্টটি অবশ্যই বন্ধুদের, আর অন্যদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।