মাতৃভাষায় বিজ্ঞানচর্চা

ভূমিকা:— ভাষাচর্চা মানুষকে মনের ভাব ব্যক্ত করতে শিখিয়েছে। মানবজাতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে আবিষ্কৃত হয়েছে লেখ্য ভাষা, যার সাহায্যে সাহিত্য, বিজ্ঞান, দর্শন প্রভৃতি বিষয়ে মানুষ অগাধ জিজ্ঞাসার উত্তর পেয়েছে। অপরদিকে বিজ্ঞানচর্চা মানুষের উন্নতির প্রধান কারণ। বিজ্ঞানকে বাদ দিয়ে মানুষ এক মুহূর্তও চলতে পারে না।

মাতৃভাষায় বিজ্ঞানচর্চার প্রয়োজনীয়তা:— প্রত্যেক মানুষ তার মাতৃভাষাতেই সবচেয়ে স্বচ্ছন্দ থাকে। তাই মাতৃভাষার মাধ্যমেই মানুষের কাছে বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলি পৌঁছে দেওয়া সহজ। মাতৃভাষাতেই বিজ্ঞান মানুষের কাছে অনেক আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। সাধারণ মানুষের কাছে বিজ্ঞান এমনিতেই কঠিন বিষয়। সেই সঙ্গে যদি ভাষার দূরত্ব থাকে তবে বিজ্ঞানচর্চা বাধা পায়। স্বাভাবিকভাবেই বাঙালির কাছে বাংলা ভাষাতে বিজ্ঞানচর্চা বেশি সহজ।

বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চা:— বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার সূচনা উনবিংশ শতাব্দী থেকে। সেইসময় জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির উদ্যোগে ‘তত্ত্ববোধিনী’ পত্রিকাতে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানবিষয়ক প্রবন্ধ রচিত হতে থাকে। পরবর্তীকালে বাংলা ভাষার মাধ্যমে বিজ্ঞানচর্চা আরও প্রসার লাভ করে। এ বিষয়ে রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী, জগদীশচন্দ্র বসু, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, চারুচন্দ্র ভট্টাচার্য, রাজশেখর বসু প্রমুখ লেখকের নাম স্মরণীয়। স্কুল-কলেজ স্তরে বাংলাভাষায় বিজ্ঞান বিষয়ক পুস্তক রচনা এক্ষেত্রে অপরিহার্য। এ বিষয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছেন। পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমেই বিজ্ঞানের প্রতি শিক্ষার্থীদের প্রথম আকর্ষণ জন্মায়। তাই বাংলা ভাষায় রচিত বিজ্ঞান বিষয়ক পাঠ্যপুস্তকগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

উপসংহার:— রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, মাতৃভাষাই মাতৃদুগ্ধ। এ কথা স্মরণ করে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চা বিষয়ে সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে প্রকাশকদের ভূমিকা ও সরকারি উদ্যোগ অপরিহার্য। আশা করা যায় ভবিষ্যতে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চা আরও উন্নতি লাভ করবে।

╍╍╍╍╍╍╍╍╍╍ 🌸 ╍╍╍╍╍╍╍╍╍

আশা করছি উপরের পোস্টটি তোমার বা আপনার প্রশ্নের উত্তর খোঁজার কাজে অনেকখানি সাহায্য করেছে। যদি এই পোস্টটি তোমার জন্য বা আপনার জন্য সহায়তা করে থাকে তাহলে এই পোস্টটি অবশ্যই বন্ধুদের, আর অন্যদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

Leave a Comment